বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫, ০৪:৪০ পূর্বাহ্ন

ফরিদপুরে সোনালী আঁশ এখন কৃষকের গলার ফাঁস

নিজস্ব প্রতিনিধি, মধুখালী, ফরিদপুর ॥
ফরিদপুরে পাটের ফলন মুটামুটি হলেও পানির অভাবে সোনালী আঁশ পাট যেন কৃষকের গলার ফাঁসে পরিণত হয়েছে। পানির অভাবে পাট না কেটে অনেকে খেতেই ফেলে রেখেছেন। বৃষ্টি নেই। বর্ষায় নদ-নদী,খাল-বিলে,পুকুর-ডোবায় পানি নেই। তাই পাট জাগ দিতে পারছে না কৃষক।

খবর নিয়ে জানা গেছে, জেলায় পাট উৎপাদনের দিক দিয়ে দ্বিতীয়। গুনে-মানে রয়েছে সুখ্যাতি। এবার অনাবৃষ্টির কারণে চাষের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পাট চাষিদের চরম ভোগান্তি ও কষ্ট পোহাতে হচ্ছে। পাশাপাশি সঠিকভাবে পাট পঁচাতে না পারায় এ অঞ্চলের পাটের আঁশের মানও এবার নিম্নমুখীর শঙ্কা রয়েছে। মহাজনদের কাছ থেকে ঋণ নেওয়া পাট চাষীরা ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়ার দুশ্চিন্তায় পড়েছে।

কৃষকরা জানান, গত বছর পাটের দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকেরা এবার পাট আবাদ বেশি হয়েছে। প্রখর রোদ্দুর,অনাবৃষ্টির কারনে পাট চাষের বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে পানির সংকট। প্রতি বিঘায় পাট চাষে কমপক্ষে ৯ থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ফলন যদি ভালো হয় তাহলে প্রতি বিঘায় সর্বোচ্চ ৯ থেকে ১০ মণ পাটের ফলন পাওয়া যায়। তারপরেও যদি কাঙ্খিত দাম না মেলে তাহলে তাদের মাথায় হাত।
কৃষি বিভাগ সুত্রে জানায়, ফরিদপুরে বেশির ভাগই তোষা জাতের পাট চাষ করা হয়েছে। জেলার নয়টি উপজেলায় এবার ৮৭ হাজার ৪৭৫ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। এবারও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি পাট চাষ করেছেন কৃষকেরা। তবে চাষের শুরুতে ও এখন বর্ষা মৌসুমেও বৃষ্টি না হওয়ায় হতাশ পাটচাষিরা।

এ ব্যাপারে মধুখালী উপজেলার পাট ব্যবসাযী মনিরুল ইসলাম বলেন, পাট কেটে কোথায় জাগ দিবো। বেশি দামে শ্রমিক নিয়ে ভ্যান, নসিমনে করে প্রায় ৫ কিলোমিটার দুরে নিয়ে রাস্তার পাশে খাদের পানিতে পুকুরে নিয়ে পাট জাগ দিতে হচ্ছে। বর্ষায় বৃষ্টি না হওয়ায় এখনও বেশিরভাগ কৃষকের জমিতেই পাট রয়ে গেছে। পানি না থাকায় জাগ দেওয়ার সমস্যায় পাট কাটতে পারছি না।

শেখর গ্রামের কৃষক শরিফুল ইসলাম বলেন, ফলন মুটামুটি হলেও পাট জাগ দেওয়া নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছি। বেকায়দার যেন শেষ নেই। ভ্যানে করে খেতের থেকে কয়েক কিলোমিটার দুরে পুকুরের অল্প পানিতে কোন মতে মাটি চাপা দিয়ে পাট জাগ দেওয়ার ব্যবস্থা করছি।

এ বিষয়ে ফরিদপুর কৃষি সম্প্রদারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ জিয়াউল হক বলেন, চাষিদের রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাটের আঁশ ছাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ পদ্ধতিতে পাট পচালে পাটের আঁশের মান ভালো থাকে। তারপরও অনাবৃষ্টি হলেও পাটের উৎপাদন খুব বেশি ব্যাহত হবে না বলে আশাবাদী।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com